বাংলায় বিজেপি সাংসদরা কাজ করে না। এই অভিযোগ আছে দীর্ঘদিনের। আর ২০২৬ সালে আছে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। ঠিক তার একবছর আগে গঙ্গারামপুরের তাঁত এবং কুশমণ্ডির মুখোশ শিল্পের উন্নয়ন করতে উদ্যোগ নিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাজুড়ে এই ক্ষুদ্র শিল্পের পরিবেশ রয়েছে। তাই এই দুই শিল্পের বিকাশ ঘটাতে চান তিনি। তাতে প্রচুর শিল্পীর কর্মসংস্থান হবে। শিল্পের বিস্তার হবে। এমনকী পুরনো ঐতিহ্যশালী শিল্প বেঁচে থাকবে বাংলায়।
এদিকে কুশমণ্ডিতে কাঠের মুখোশ তৈরির সঙ্গে যুক্ত আছেন ব্লকের কয়েকশো শিল্পী। এই শিল্পীদের অবস্থা এখন ভাল নয়। কারণ এই জিনিস তৈরি করলেও বাজারে তার দাম নেই। আর এই দুটি জিনিসই তৈরি করতে লাগে টাকা। সে টাকা কোথা থেকে আসবে? উঠছে প্রশ্ন। একদা গঙ্গারামপুরের তাঁত শিল্প জনপ্রিয়তা পেলেও এখন তা ধুঁকছে সরকারি উদাসীনতায় বলে অভিযোগ। সুকান্ত মজুমদারের উদ্যোগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর শহরের কালীতলায় একটি বেসরকারি কমিউনিটি হলে কাঠের মুখোশ এবং গঙ্গারামপুরের তাঁতিদের নিয়ে একটি সচেতনতা শিবির হল। সেখানেই এই শিল্পকে বাঁচানোর উদ্যোগ তিনি নেবেন বলে জানান।
আরও পড়ুন: ভারতের দ্বিতীয় অত্যাধুনিক ‘কেবল ব্রিজ’ গড়ে উঠছে হাওড়ায়, চলতি বছরেই ব্যবহার হবে
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের খাদি কমিশন এই সচেতনতা শিবিরে মুখ্য ভূমিকায় ছিল। একদিনের এই সচেতনতা শিবিরে তাঁত ও মুখোশ শিল্পীরা নিজেদের হাতের তৈরি কাজ উপস্থাপন করেন। তারপর গোটা বিষয়টি দেখে খাদি কমিশনের মাধ্যমে জেলার এই শিল্পীদের উৎসাহিত করতে প্রধানমন্ত্রী কর্মসৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৫ শতাংশ এবং ২৫ শতাংশ হারে ভর্তুকি ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে কথাবার্তা হয়। যদিও এই শিল্পীদের নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের উদ্যোগকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এতদিন পর তাঁত এবং মুখোশ শিল্পীদের দিকে নজর পড়ল কেন্দ্রের? প্রশ্ন তোলা হয়। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, ‘এতদিনে এই জেলায় কাঠের মুখোশ এবং তাঁতিরা কী সুবিধে পেয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে? সেটা কেউ বলতে পারবেন না।’
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে বাংলা এখন এগিয়ে রয়েছে। সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টেই আছে। এই জেলার বহু শিল্পী ভর্তুকিতে ঋণ নিয়ে স্বনির্ভর হচ্ছেন। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খাদি কমিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর এপি চৌবিন–সহ জেলা ও ব্লকের অফিসাররা। তবে গঙ্গারামপুরের তাঁতিদের অবস্থা ভাল নয়। বহু শিল্পী নিজেদের পেশা বদলে ফেলেছেন কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বলে অভিযোগ। আর এই তাঁত শিল্প বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য প্রয়োজন। গঙ্গারামপুরের তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। মন্ত্রী বলেন, ‘আমি খাদি মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলছি, গঙ্গারামপুরের তাঁতিদের দুর্দশা মেটাতে। আগামী দিনে খাদি কমিশনের মাধ্যমে উন্নত প্রশিক্ষণ এবং শিল্পীদের তৈরি সামগ্রী যাতে বাজারজাত হয় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’