Nepal loses to Afghanistan by one run: নেপালের বিরুদ্ধে অনূর্ধ্ব-১৯ একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে আফগানিস্তানের এক রানে নাটকীয় জয় দেখে অবাক ক্রিকেট বিশ্ব। ঘটনাটা আপনিও জানলে অবাক হয়ে যাবেন। আসলে রবিবার, মুলপানি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত একটি রোমাঞ্চকর অনূর্ধ্ব-১৯ একদিনের আন্তর্জাতিক (ODI) ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখমুখি হয়েছিল নেপাল। এই ম্যাচে নেপালকে মাত্র এক রানে হারিয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান, তাও আবার ভুল ভাবনার জন্য।
এই ম্যাচে কী নাটক দেখা গেল-
নেপালের ম্যাচ জিততে দরকার ছিল ৩ বলে ৩ রান। আফগানিস্তানের মাহবুব খান একটি নো বল করেন, যা ধ্রুব সুনারকে বোল্ড করে। তবে নো বল হওয়ায় সুনার আউট হননি।
কিন্তু সুনার ভেবেছিলেন তিনি আউট, তাই অসাবধানভাবে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান। সেই সুযোগে আফগান উইকেটকিপার তাঁকে রান আউট করে দেন। ফলে আফগানিস্তান ১ রানে জিতে যায় ম্যাচটি। এরপরে মাঠে উত্তেজনা ছড়িয়ে যায়।
নিয়ম কী বলছে? নো-বলে কখন ব্যাটসম্যান আউট হয়, কখন আউট হয় না-
আউট হয় না কখন-
নো বলের সঙ্গে সঙ্গে বল ডেড হয়ে যায়।
ব্যাটসম্যান আউট, এবং কোনও রান (বাই বা লেগ-বাই) তখন আর গণনা হয় না।
আউট হয় কখন-
যতক্ষণ বল ডেড হয় না। অর্থাৎ যতক্ষণ খেলা চলতে থাকে, যতক্ষণ না বল ফিল্ডারের হাতে থামে, ব্যাটসম্যান আউট হয় অন্যভাবে, বা বল বাউন্ডারি ছুঁয়ে যায়।
অর্থাৎ, যদি নো-বলে বল স্টাম্পে লাগে এবং তারপর বাই হয়ে বাউন্ডারিতে যায়, তাহলে ৪ বাই এবং ১ রান নো-বলের জন্য, সব মিলে ৫ রান যুক্ত হয়।
১) এটা আইসিসি’র আইন ২০.১.২ ও ২১.১ অনুযায়ী বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন … ভিডিয়ো: সকলের সামনে LSG-র ব্যাটারের পায়ে পড়লেন KKR মেন্টর! কেন এমন করলেন ব্র্যাভো?
যখন DRS নেওয়া হয় এবং সিদ্ধান্ত বদলে আউট হয়
ধরো ব্যাটসম্যানকে ফিল্ড আম্পায়ার ‘নট আউট’ দিয়েছিলেন, কিন্তু DRS নিয়ে দেখা গেল যে সে আউট ছিল (যেমন: এলবিডব্লিউ)।
তখন আইন অনুযায়ী, বল ‘পিছনের সময় থেকে ডেড’ বলে গণ্য হয় — অর্থাৎ যেই মুহূর্তে ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার কথা ছিল, তখন থেকেই বল ডেড ধরা হয়।
এর ফলে, যদি ঐ ডেলিভারিতে লেগ-বাই হয়ে ৪ রানও হয়ে থাকে, সেগুলো আর গণ্য হবে না, কারণ ব্যাটসম্যান আউট ছিল।
এই ম্যাচের নিয়ম কী বলছে?
আইসিসি আইন ২০.১.২ (Dead Ball) ও ২১.১ (No Ball) — এখানে বলা আছে, নো-বলের ক্ষেত্রে বল ডেড হবে না যতক্ষণ না সেটা স্বাভাবিক নিয়মে থামে।
আরও পড়ুন … গ্রেফতার কানাডা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক! নিকোলাস কির্টনের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ
কেমন ছিল শেষ ওভার?
শেষ ওভারে জয়ের জন্য নেপালের দরকার ছিল ১১ রান। ১৫৮ রানে ৯ উইকেট হারানোর পরও শেষ চেষ্টা চালায় দলটি। কিন্তু নাটকীয় শেষ ওভারে মাত্র ১ রানে হেরে যায় স্বাগতিকরা। ফলে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে সিরিজটিও হাতছাড়া হয় নেপালের।
ম্যাচ কেমন গড়িয়েছিল?
প্রথমে ব্যাট করে আফগানিস্তান ৫০ ওভারে ১৬৯ রান করে অলআউট হয়ে যায়। অধিনায়ক মাহবুব খান ৫৮ রান করে সর্বোচ্চ স্কোর করেন। তাঁর পাশাপাশি রুহুল্লাহ আরব করেন ২৭ রান এবং উজাইরউল্লাহ নিয়াজাই করেন ১৯ রান। ডাবল ডিজিটে পৌঁছাতে পেরেছিলেন আরও তিনজন—নাজিফউল্লাহ আমিরি (১৬), খতির স্তানিকজাই (১১), ও খালিদ আহমদজাই (১০)। বাকি ব্যাটাররা হতাশ করেছিলেন।
নেপালের হয়ে বল হাতে দারুণ পারফরম্যান্স করেন সন্তোষ যাদব, তিনি তিনটি উইকেট নেন। বিপিন শর্মা ও সিবরিন শ্রেষ্ঠা দুইটি করে উইকেট নেন, এবং অভিষেক তিওয়ারি ও অপরাজিত পোদেল নেন একটি করে উইকেট।
আরও পড়ুন … ধোনি আমার বাবা… কেন সঙ্গীত ছেড়ে বাইশ গজে এলেন পথিরানা? সামনে এল CSK তারকার অজানা কাহিনি
জবাবে ব্যাট করতে নেমে, নেপাল ৪৯.৩ ওভারে ১৬৭ রানেই অলআউট হয়ে যায়। মাত্র ২ রান দূরে থেমে যায় জয়ের স্বপ্ন। সাহিল প্যাটেল করেন সর্বোচ্চ ৬৪ রান, অভিষেক তিওয়ারি করেন ২৪ রান এবং ধ্রুব সুনার করেন ২১ রান। এছাড়া নিরাজ কুমার যাদব (১৫), নারেন ভট্ট (১৩), রোশন বিশ্বকর্মা (৯), দিলসাদ আলী (৮), সন্তোষ যাদব (৪) ও সিবরিন শ্রেষ্ঠা (২) রান করলেও জয় এনে দিতে পারেননি।
এই ম্যাচ জয়ের ফলে সিরিজের কী অবস্থা?
এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে এক ম্যাচ আগেই সিরিজ জিতে নেয় আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বুধবার, আবারও মুলপানি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। এই হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচটি তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে উঠেছে।