কৃষি-নির্ভর জীবনযাত্রায় অনেক লোক বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে। কৃষি-নির্ভর জীবন প্রকৃত অর্থেই প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, বন্যা, খরা ও শিলাবৃষ্টি, এগুলি সবই কৃষিজীবনের অঙ্গ। তাই অতিবৃষ্টি ও বন্যার তোপে নদীর ভাঙন আটকাতে সহজ, সরল গ্রামবাসীগণ ঠাকুরের পুজো করেন। অনাবৃষ্টির হাত থেকে ক্ষেত ও শস্য রক্ষার জন্য গান গেয়ে বৃষ্টিকে আহ্বান জানান।
ফসল জনিত বিভিন্ন লৌকিক বিশ্বাস
কৃষি-নির্ভর জনজীবনে প্রচলিত বিশ্বাস হল যদি পিতা ও পিতামহ কোনওদিন বৃক্ষ রোপণ না করে থাকেন বা যাঁদের পূর্বপুরুষ কোনওদিন ফসল চাষ করেননি তাদের সন্তান সন্ততিদের ভবিষ্যৎ এ বিপদের আশঙ্কা থাকে, তাঁর জন্য কলাগাছ রোপণ করা লৌকিক বিশ্বাস। আবার যে পরিবারে পূর্বপুরুষরা কোনওদিন শাক আলু বা কেশর আলু বোপন করেননি তাদের বংশের মধ্যে কেউ পরবর্তীকালে তা বুনলে বংশধরগণ রোগ ভোগে আক্রান্ত হন।
সবজি ক্ষেতে কোনও হাঁড়ি কলসির মূর্তি তৈরি করে রাখলে বা কাকতাড়ুয়া রাখলে কারও নজর লাগে না এবং ফলন বেশি হয়। অর্থাৎ প্রতিবেশীর কুদৃষ্টি থেকে ক্ষেতের ফসল রক্ষার জন্য এরূপ ব্যবস্থা করা হয়। কচ্ছপের খোলে করে যে কোনও শস্য বা বীজ ক্ষেতে ফেললে ফসলের ফলন বাড়ে বলে বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে।
মাঠে ফসলকাটার সময় ধান বা পাট যাই হোক না কেন, দু'একটি গাছ ক্ষেতে রাখতে হয়। লোকবিশ্বাস অনুসারে এতে পরবর্তী বছর ক্ষেতে ফসল বেশি হবে। চৈত্র, বৈশাখ মাসে শিলাবৃষ্টি হওয়ার সময় উঠোনে কাঠের পিঁড়ি ছুড়ে দিতে হয়। লোকবিশ্বাস এতে শিলাবৃষ্টি ও ঝড় থেমে যায়। অনেকে আবার সর্ষেও ছিটিয়ে দেন। মেয়েরা বীজ বপন করলে উৎপাদন বেশি হবে। বহু সন্তানবতী নারী ক্ষেতের পক্ষে শুভ ফলদায়িনী।
তেমনই ধান বীজ রোপনের জন্যও শুভ দিনক্ষণ দেখে তারপর বীজ রোপন করা হয়। আসুন জেনে নিই জ্যৈষ্ঠ মাসে ধান বীজ রোপনের শুভ দিন কবে কবে আছে, সে সম্পর্কে।
জ্যৈষ্ঠ মাসে ধান বীজ রোপণের শুভ সময়
১) ২৪ জ্যৈষ্ঠ ধান বীজ রোপণের শুভ সময় দুপুর ১ টা ১৭ মিনিটের মধ্যে।
২) ২৫ জ্যৈষ্ঠ ধান বীজ রোপণের শুভ সময় সকাল ৯ টা ১৩ মিনিটের মধ্যে।
৩) ২৮ জ্যৈষ্ঠ ধান বীজ রোপণের শুভ সময় দুপুর ২ টো ৫৮ মিনিটের মধ্যে।